কাঠবুড়ো
সুকুমার রায়
হাঁড়ি নিয়ে দাঁড়িমুখো কে-যেন কে বৃদ্ধ
রোদে বসে চেঠে খায় ভিজে কাঠ সিদ্ধ ।
মাথা নেড়ে গান করে গুন্গুন্ সঙ্গীত,
ভাব দেখে মনে হয় না-জানি কি পন্ডিত ।
বিড়্বিড়্ কি যে বকে নাহি তার অর্থ-
"আকাশেতে ঝুল ঝোলে তাই কাঠে গর্ত ।"
টেকো মাথা তেতে ওঠে গায়ে তার ঘর্ম,
রেগে বলে, "কেবা বোঝে এ সবের মর্ম ?
আরে মোলো, গাধাগুলো একেবারে অন্ধ,
বোঝেনাকো কোনোকিছু খালি করে দ্বন্দ ।
কোন কাঠে কত রস জানে নাকো তত্ত্ব,
একাদশী রাতে কেন কাঠে হয় গর্ত ?"
আশেপাশে হিজিবিজি আঁকে কত অঙ্ক
ফাটা কাঠ ফুটো কাঠ হিসাব অসংখ্য ;
কোন্ ফুটো খেতে ভালো, কোন্টা বা মন্দ,
কোন্ কোন্ ফাটলের কিরকম গন্ধ ।
কাঠে কাঠে ঠুকে করে ঠকাঠক শব্দ ।
বলে, "জানি কোন্ কাঠ কিসে হয় জব্দ ;
কাঠকুঠো ঘেঁটেঘুঁটে জানি আমি স্পষ্ট,
এ কাঠের বজ্জাতি কিসে হয় নষ্ট ।
কোন্ কাঠ পোষ মানে, কোন্ কাঠ শান্ত,
কোন্ কাঠ টিমটিমে, কোন্টা বা জ্যান্ত ।
কোন্ কাঠে ঞ্জান নেই মিথ্যা কি সত্য,
আমি জানি কোন্ কাঠে কেন থাকে গর্ত ।"